বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন

গোয়েন্দা প্রতিবেদন গোপন থাকছে না

গোয়েন্দা প্রতিবেদন গোপন থাকছে না

স্বদেশ ডেস্ক:

সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পাঠান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু খুবই স্পর্শকাতর ও অতীব গোপনীয় এসব প্রতিবেদন চলে যাচ্ছে খোদ অভিযুক্তদের হাতে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ইতোমধ্যেই সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে সরকারের তরফে। এতে বলা হয়েছে, গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো যেন যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়; ফাঁস না হয়ে যায়।

জানা গেছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন অভিযুক্তদের হাতে চলে যায়। এতে করে মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অস্বস্তিকর পরিবেশে পড়ছেন। তাদের কাজেও এক ধরনের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকছে না এবং এক ধরনের অবিশ্বাস সৃষ্টি হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ জেলার হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি রিপন রায় লিপুর নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকা- এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার বিষয় উল্লেখ করে সরকারের শীর্ষমহলে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন জমা দেয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা। ওই প্রতিবেদনের পরামর্শে বলা হয়, রিপন রায় লিপু যেন ট্রাস্টি হিসেবে পুনর্নিয়োগ না পান, তা র্ধমবিষয়ক মন্ত্রণালয় যেন বিবেচনা করে। সেই প্রতিবেদন পেয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব একজন যুগ্ম সচিবকে (সংস্থা) তা উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। এদিকে মন্ত্রণালয়ের কোনো এক কর্মকর্তা বা কর্মচারীর মাধ্যমে এ প্রতিবেদন রিপন রায় লিপুর হাতে চলে যায়। এর পর সেই প্রতিবেদনের কপিসহ সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার

মহাপরিচালকের কাছে পুনঃপ্রতিবেদন প্রদানের জন্য আবেদন করেন লিপু। সেই আবেদনে তিনি লিখেছেন, যে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, সেটা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এ ছাড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি কে জমা দিয়েছে সেটাও তিনি জানতে চান। এমন অনাকাক্সিক্ষত চিঠির জেরে ক্ষুব্ধ ওই গোয়েন্দা সংস্থার তরফে সরকারকে বিষয়টি জানানো হয় এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব সাজ্জাদুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় প্রতিবেদন যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ইতোমধ্যে কয়েক দফা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বিভিন্ন সচিবদের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার জেরে নানাবিধ সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারি তথ্য বেহাত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য স্বার্থান্বেষী পক্ষের হাতে চলে যাচ্ছে; মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে; নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ হচ্ছে; মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্ম পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে; বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877